একই মাদ্রাসা অথচ দুইটি অফিস কক্ষ ,একটিতে প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি যিনি জমি দান করেছেন। তখনকার মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠাতা সুপারিনটেন্ট আমিনুল ইসলাম মিয়া বসেন তার ২৯ জন স্টাফ নিয়ে। সুপার আমিনুল ইসলাম মিয়া প্রতিষ্ঠালগ্ন ২০১৫ সাল থেকে সুপারেন্টেন্ট পদে আছেন, অন্য অফিস কক্ষে বসা সুপারেন্টেন্ট পদের দাবী করা শাহনুর আলম সহ তাদের নিয়োগপ্রাপ্ত ২৬ জন বসেন। শিক্ষার্থীদের একই বিষয়ে একটি গ্রুপের শিক্ষক ক্লাস নিয়ে বের হলে অন্য শিক্ষক গ্রুপের একই বিষয়ের শিক্ষক গিয়ে ঢোকেন ওই ক্লাসটিতে ! পরবর্তীতে নিয়োগ প্রাপ্ত ২৬ জন এবং সুপার পদে দাবি করা ওই নিয়োগ গুলো কিভাবে হয়েছে, তা জানেন না প্রতিষ্ঠাতা মাদ্রাসা সুপার আমিনুল ইসলাম মিয়া, যার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে শিক্ষক কর্মচারীর সংখ্যা ব্যানবেইস অনুযায়ী ২৯ জন । পরবর্তীতে অভিযুক্ত সহ সুপারের এবং স্বঘোষিত সভাপতি পদে দাবি করা অবৈধ নিয়োগে প্রায় অর্ধকোটি টাকার মতো লেনদেন হয়েছে বলে অনুমান করেন, প্রতিষ্ঠাতা সুপার আমিনুল ইসলাম মিয়া।
উপরোক্ত বিষয়ের ঘটনাবলীর আলোকে করা মামলাটি বেঞ্চে উঠলে ১৩ ডিসেম্বর সোমবার কুড়িগ্রাম চিফ জুডিসিয়াল মাজিস্ট্রেট সুমন আলী তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
স্বঘোষিত সুপার পদের দাবী করা শাহানুর আলম ফুলবাড়ী উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের অনন্তপুর ঘুঘুরহাট গ্রামের ময়েন উদ্দিনের ছেলে ও সভাপতি পদে আব্দুল খালেক দাশিয়ারছড়ার মৃত আজগার আলীর ছেলে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশে অভিযুক্তদের কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ফুলবাড়ী উপজেলার বিলুপ্ত ছিটমহল দাশিয়ারছড়ার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা দাখিল মাদরাসার সহকারী সুপার পদে থেকে শাহনুর আলম নিজেকে সুপার এবং আব্দুল খালেককে সভাপতি দেখিয়ে মাদরাসার সুপার আমিনুল ইসলাম মিয়া ও সভাপতি আ. রহমান মিয়ার অজান্তে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ দেন। বিষয়টি জানতে পেরে মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আ. রহমান মিয়া ২০২০ সালের জুন মাসে শাহনুর আলম ও আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ এনে মামলাটি করেন।
আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়ার পর সোমবার অভিযুক্ত সহকারী সুপার শাহনুর আলম ও ‘ভুয়া’ সভাপতি আব্দুল খালেক আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা দাখিল মাদরাসার সুপার আমিনুল ইসলাম মিয়া বলেন, শাহনুর আলম সহকারী সুপার হলেও নিজেকে সুপার এবং আব্দুল খালেককে ভুয়া সভাপতি দেখিয়ে যোগসাঁজে সে প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে কাগজপত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠান। পরে বিষয়টি জানতে পেরে মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আ. রহমান মিয়া বাদী হয়ে মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পান। জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত থাকায় আদালত তাদের আজ ১৩ ডিসেম্বর সোমবার কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
ছিটমহল বিনিময়ের পরপরই ২০১৫ সালে দাশিয়ারছড়ার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা দাখিল মাদরাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে এটি সরকারি ঘোষণা করা হয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে ২৯ জন শিক্ষক-কর্মচারী বৈধ নিয়োগে কর্মরত আছেন বলে প্রতিষ্ঠাতা সুপার আমিনুল ইসলাম মিয়া জানান। তবে শিক্ষক কর্মচারীরা এখনো মাসিক পেমেন্ট অর্ডার (এমপিও) পাননি।
প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুর রহমান ও প্রতিষ্ঠাতা সুপারিন্টেন্ট আমিনুল ইসলাম মিয়া বলেন, ১৮ সালের নভেম্বরে অভিযুক্ত সুপার শাহানুর আলম যোগদান দেখান । প্রতিষ্ঠাতা সুপারেন্টেন্ট আরো যোগ করেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আত্মীয়-স্বজন বিভিন্ন প্রকার ভয় ভীতিও দেখাচ্ছেন মামলা করার কারণে।
Leave a Reply