সমবায় সমিতির নিবন্ধন করতে গিয়ে বারহাট্টা উপজেলার অনেকেই এমন তিক্ত অভিজ্ঞার সম্মুখীন হয়েছেন । কোনো প্রতিকার না পেয়ে শেষে পর্যন্ত বাধ্য হয়ে কর্মকর্তাদের ঘুষের দাবি মেনে নিয়েই সমিতির নিবন্ধন নিচ্ছেন ।
ঘুষ গ্রহণের এমন অভিযোগ বারহাট্টা উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা আতাউর রহমান ও সহকারী পরিদর্শক পান্না আক্তারের বিরুদ্ধে রয়েছে ।
ভুক্তভোগী বারহাট্টা উপজেলার মল্লিকপুর গ্রামের হুমায়ুন কবির আরও বলেন, “মল্লিকপুর মহিলা সমবায় সমিতি” গঠন করার পর নিবন্ধন করাতে বারহাট্টা সমবায় কার্যালয়ে যাই। ফাইলপত্রের জন্য তারা
(৫ হাজার) পাঁচ হাজার চায় । পাঁচ হাজার টাকা নেয়ার পর তারা আরও টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। একপর্যায়ে তারা জানায়, ওই পাঁচ হাজার ফাইলপত্র, খাতা, কলম ইত্যাদি কিনতেই শেষ হয়েগেছে । তারা আরও বলেন, নিবন্ধন পেতে হলে আরও ২৫ হাজার টাকার লাগবে । অবশেষ বাধ্য হয়ে ১৫ হাজার টাকা দিতে রাজিও হই। কিন্তু এতেও কাজ হয়নি। এক টাকাও কম হবে না বলে তারা সাফ জানিয়ে দেয়।
তার অভিযোগ, সমবায় কার্যালয়ের সহকারী পরিদর্শক পান্না আক্তার মূলত ঘুষ চাওয়ার কাজটি করেন। তবে, এ বিষয়ে কর্মকর্তা আতাউর রহমানকে জানালেও তিনি নীরব থাকেন। হয়তো তাদের মধ্যে একটা যোগসাজশ আছে।
এমন আরে অনেক ভুক্তভোগী আছেন, যারা সমবায় অফিসে নিবন্ধন
করতে গিয়ে ঘুষের চাকায় পিষ্ট হতে হয় । অনুরোধ করে টাকার পরিমাণ কিছুটা কমাতে গেলে সে চেষ্টও বিফলে যায় । বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কাউকে জানানোর প্রয়োজন বলে সবাই মনেকরে ।
বিষয়টি জানতে, বারহাট্টা সমবায় কার্যালয়ে গেলে কর্মকর্তা আতাউর রহমান ও সহকারী পরিদর্শক পান্না আক্তার দু’জনেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তারা ঘুষের বিষয়টি অস্বীকার করলেও একপর্যায়ে তাদের কাছে থাকা পাঁচ হাজার টাকা বের করে দিয়ে, উত্তেজিত হয়ে পান্না আক্তার বলেন, এই নেন টাকা, সমিতি আর কোনো দিনও নিবন্ধন হবে না।
ঘুষের বিষয়ে তিনি বলেন, এই অফিসটা একটা ঘুষের আখড়া । ঘুষ চাওয়ার কাজটা আমি পান্না করলেও ভাগ দুজনেই নেয় ।
পান্না আক্তার নিজের কাছে থাকা, ঘুষের টাকা বের করে অভিযোগকারীকে ফিরিয়ে দিলেও সমিতির নিবন্ধনে কোনো ঘুষ নেন না বলে তিনি জানান ।
অভিযোগকারীদের অভিযোগের বিষয় জানালে, বারহাট্টা উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা আতাউর রহমান বলেন, কার কাছ থেকে কত টাকা নেয়া হলো এসব বিষয় সাংবাদিকের জানা দরকার । তিনি সাহসের সাথে বলেন, আপনারা জেনেও কিছু করতে পারবেন না। কারণ আমি যদি না চাই তবে, সমিতির নিবন্ধন কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও দিতে পারবে না।
বিষয়টি অবগত করলে জেলা সমবায় কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিন ইসলাম (অতিরিক্ত দায়িত্ব) বলেন, একটি সমবায় সমিতির নিবন্ধন পেতে রাজস্বসহ সব মিলিয়ে খুব বেশি হলেও আড়াই হাজার টাকার বেশি খরচ হওয়ার কথা নয়। এ বিষয়ে ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগ দিলে খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রিপন কান্তি গুণ
উপজেলা প্রতিনিধি, বারহাট্টা, নেত্রকোনা ।
তারিখ : ২৪/১১/২০২১
মোবাইল : 01723-632594
Leave a Reply