মেঘাালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির কারণে নেত্রকোনার খালিয়াজুরীর ধনু নদীর পানি হঠাৎ করেই আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। পানি ঢল প্রায় বিপদৎসীমার কাছাকাছি চলে আসতে শুরু করেছে।
এমতাবস্থায় ফসল রক্ষা বেরী বাঁধের প্রতি বিশেষ নজর রাখাতে সকল পিআইসি সদস্যবৃন্দ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানিয়েছেন খালিয়জুরী উপজেলা প্রশাসন।
একমাত্র ফসলের ওপর নির্ভরশীল মদন-মোহনগঞ্জ-খালিয়াজুরী হাওরাঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষ। আগাম বন্যার এমন আশঙ্কায় অনেকটাই দিশেহারা হয়ে পরছেন কৃষকরা। সবে মাত্র ধানের শীষ এসেছে জমিতে, কাটার উপযোগী হতে সময় লাগবে আরো অন্তুত ১৫/২০ দিন। জেলার হাওরাঞ্চলের মাঝে সবচেয়ে গভিরতা হচ্ছে খালিয়াজুরী। খালিয়াজুড়ির চুনাই হাওর পানির নিচে তলিয়ে গেছে, মোহনগঞ্জের হাওরগুলো নিয়েও শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে।
খালিয়াজুরী সদেরর কৃষক মনির হোসেন জানান, খালিয়াজুরীতে কমপক্ষে ৫শ একর জমির ফসল তলিয়েছে। এরমধ্যে তার নিজের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২০ একর জমির ধান।
খালিয়াজুরী কৃষি কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ঢলের পানি প্রবাহ অব্যহত রয়েছে। পানির এমন প্রবাহ থাকলে সপ্তাহখানের মধ্যেই ফসল রক্ষা বাঁধ উপচে খালিয়াজুরী উপজেলার সমস্ত বোরো ফসল তলিয়ে যাবে। তিনি জানান, এ উপজেলায় এবার ২১ হাজার ১শ ২০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে ।
নেত্রকোণা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত শনিবার সন্ধ্যায় জানান, ভারতের চেরাপুঞ্জি থেকে বৃষ্টির পানি বাংদেশের সুনামগঞ্জের যাদুকাটা ও সুরমা নদী দিয়ে খালিয়াজুরীর ধনু নদীতে ঢল আকারে নামছে। তাই ৩০ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল সন্ধ্য পর্যন্ত ধনু নদীর পানি বেড়েছে পৌনে ৬ ফুট। এরমধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় বেড়েছে ৩ ফুট।
তিনি আরো বলেন, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে আগামী কয়েকদিনও মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি হতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্ববাস রয়েছে। যদি সেখানে বৃষ্টি হয়ই তবে কয়েক দিনের মধ্যে সেই বৃষ্টির পানি এসে তা ধনু নদীতে বিপদ সীমা অতিক্রম করবে।
নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান বলেন, নির্দিষ্ট একটি নিয়মের উচ্চতায় প্রতি বছর হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এবারও নিয়ম অনুযায়িই বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এখন অতিরিক্ত মাত্রায় পানি বেড়ে গেলেও আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো বালু ভর্তি বস্তা দিয়ে পানি ঠেকিয়ে বর্তমানে ঠিকে থাকা ফসল বাঁচাতে। আর ইতিমধ্যে যেসব কৃষকের ফসল নষ্ট হয়ে গেছে সেসব ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা তৈরীর মাধ্যমে সহায়তা দেয়ার চেষ্টা করা হবে।
সেইসাথে বাধ ক্ষতিগ্রস্থের পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে মাটি ভর্তি ৮হাজার বস্তা জিয়ো ব্যাগ প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলেও নিশ্চিত করেছেন তিনি। গতকাল রাত ৮টা পর্যন্ত জেলা প্রশাসক খালিয়াজুরীরর গুরুত্বপূর্ণ বাঁধ কৃর্তনখোলা নাউটানাসহ বিভিন্ন বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করছেন বলে জানা গেছে।
Leave a Reply