পর্যাপ্ত অবকাঠামো থাকার পরও দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলায় অবস্থিত বিজয়পুর স্থলবন্দর। এক সময় এই বন্দর দিয়ে ভারত থেকে কয়লা আমদানি করা হলেও ২০১৬ সালে ভারতের পরিবেশবাদী সংগঠনের করা মামলায় তা বন্ধ হয়ে যায়।
স্থলবন্দর বন্দ থাকায় অত্র এলাকার ব্যবসায়ীদের কোটি কোটি টাকা ভারতের ব্যবসায়ীদের কাছে পড়ে থাকায় দিশেহারা হয়ে পড়ছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। এ নিয়ে (১০/০২/২২) বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গেলে কয়লা ব্যবসায়ীরা সাংবাদিকদের এমনটাই জানিয়েছেন।
স্থলবন্দর পরিদর্শন করে দেখা গেছে, প্রায় ৫ বছর ধরে স্থলবন্দরটি বন্ধ থাকায় নষ্ট হচ্ছে আমদানিকারকদের অফিসের আসবাবপত্র। ওই বন্দরে কর্মরত অনেক কয়লা শ্রমিকরা বেকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
তাদের দাবি, আমরা সীমান্ত এলাকার খেটে খাওয়া মানুষ, আইনি জটিলতার কারণে আমরা অতি কষ্টে জীবন-যাপন করছি। এক সময় এই বন্দর দিয়ে কয়লা ও পাথরসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি হতো। কিন্তু ভারতীয় অংশে উন্মুক্ত কয়লা তোলার বিরুদ্ধে পরিবেশবাদীরা মামলা করায় তা বন্ধ হয়ে যায়। বন্দরটি পুনরায় চালু হলে দুই দেশই অর্থনৈতিক সুবিধা ভোগ করবে।
বন্দরটি পুনরায় চালু হলে স্থানীয়ভাবে অর্থনীতির উন্নয়নের পাশাপাশি সরকারি রাজস্ব বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ মানুষের জীবিকায় নতুন সম্ভাবনা যুক্ত হবে। সেই সঙ্গে অল্প সময়ে সারা দেশে কয়লা, পাথরসহ কমপক্ষে ১৮টি পণ্য আমদানি করা সম্ভব হবে।
ইতোমধ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য মানু মজুমদারের প্রচেষ্টায় দুর্গাপুর এলাকার কয়লা ব্যবসায়ী এবং ওই এলাকার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সুব্রত সাংমাসহ ভারতের রপ্তানিকারকদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে যাচ্ছেন। এতে নতুন করে বন্দরটি চালুর সম্ভাবনাও রয়েছে।
বিজয়পুর বিজিবি ক্যাম্প ইনচার্জ বলেন, ভারতের করা মামলায় আটকে গেছে কয়লা আমদানি আমাদের দেশের কম করে হলেও ২৫টি অফিস ও তার আসবাবপত্র নষ্ট হচ্ছে। আমাদের ব্যবসায়ীদের বহু টাকা ভারতে আটকা পড়ে আছে। এ নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক হচ্ছে। আমাদের বর্ডার দিয়ে কোনো সমস্যা নাই, আশা করছি এবার চালু হতে পারে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান বলেন, বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে কয়লা আমদানি করতে কোনো সমস্যা নাই। ভারতের আইনি জটিলতার কারণে তা বন্ধ রয়েছে। বিগত সময়ে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই দেশের প্রশাসনের কাছে পত্র প্রেরণও করা হয়েছে। বন্দর চালুর বিষয়ে নানা বৈঠকও অব্যাহত রয়েছে, আশা করছি এ বছরই বন্দর চালু হতে পারে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য মানু মজুমদার বলেন, ভারতের পরিবেশবাদীদের করা মামলার বিষয়সহ অন্যান্য নানা বিষয়ে বিগত সময়ে ভারতের শিলং এ দুই দেশের জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা সভা করেছেন। বিজয়পুর সীমান্তের বন্দরটির গুরুত্ব তুলে ধরে ইতোমধ্যে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠক করেছি। তারা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখবেন বলে আমাদের আশ্বাসও দিয়েছেন। অচিরেই মামলা জটিলতা নিরসন করে পুনরায় বন্দরটি চালু হবে বলে আমি আশাবাদী।
Leave a Reply