গ্রাম বাংলায় এক সময় খুব জনপ্রিয় খেলা ছিল লাঠি খেলা। কিন্তু বর্তমানে কালের বির্বতনে মানুষ ভুলতে বসেছে এসব লাঠি খেলা ও বিনোদন থেকে।
বর্তমানে লাঠি খেলার নতুন করে কোন সংগঠন বা দল তৈরি না হওয়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা। ঢোল আর লাঠির তালে তালে নাচা-নাচি, অন্য দিকে প্রতিপক্ষের হাত থেকে আত্মরক্ষার কৌশল অবলম্বনের প্রচেষ্টা সম্বলিত টান টান উত্তেজনার একটি খেলার নাম লাঠি খেলা। এ খেলা একটি ঐতিহ্যগত মার্শাল আর্ট।
এই খেলার জন্য লাঠি সাড়ে চার থেকে পাঁচ ফুট লম্বা হয়। তবে প্রতিটি লাঠিই হয় প্রায় তৈলাক্ত। প্রত্যেক খেলোয়ার তাদের নিজ নিজ লাঠি দিয়ে রণকৌশল প্রদর্শন করে।
এই খেলায় শিশু থেকে শুরু করে যুবক ও বৃদ্ধ পুরুষেরাই লাঠি খেলায় অংশ নিয়ে থাকেন। লাঠিখেলার আসরে লাঠির পাশাপাশি যন্ত্র হিসেবে ঢোল, কর্নেট, ঝুনঝুনি ও বিভিন্ন প্রকার বাঁশি ব্যবহার হয়ে থাকে। এছাড়া সঙ্গীতের পাশাপাশি এ খেলার সাথে চুড়ি নৃত্য দেখানো হয়।
সিরাজগঞ্জ চৌহালী উপজেলার সদিয়া চাঁদ পুর ইউনিয়নের বেতিল আহসান নগরের শহিদুল ইসলাম বলেন, গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা আজ বিলুপ্ত প্রায়। আমাদের অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের লাঠিখেলা রয়েছে। আগে দেখতাম গ্রামের সাধারণ মানুষেরা বাংলা বর্ষবরণ, বিবাহ, চড়ক পূজা, মুসলমানি/ সুন্নেতে খাৎনা ইত্যাদি উপলক্ষে লাঠি খেলার আয়োজন করতেন। আজ আমার ছেলের সুন্নতে খাৎনা উপলক্ষে এ লাঠি খেলার আয়োজন করেছি।
আর এই লাঠি খেলা দেখতে গ্রামের নারী পুরুষ সহ সকল শ্রেনীর লোক ভির জমিয়েছিলো।
গ্রামের জনপ্রতিনিধি,ও প্রবীণ ব্যক্তিরা বলেন।এ খেলাটি দিন দিন বিলুপ্তি হওয়ার কারণে এর খেলোয়ার সংখ্যাও কমে যাচ্ছে। তৈরি হচ্ছে না কোন নতুন খেলোয়ার। আর পুরনো অভিজ্ঞ খেলোয়াড়রা অর্থাভাবে প্রসার ঘটাতে পারছেন না এ খেলায়।
অনেকে মন্তব্য করে বলেন, এসব খেলার মাধ্যমে বিনোদন পেলে তরুনেরা মাদক ছেড়ে এই বিনোদনে আগ্রহী হতো। তাই ঐতিহ্যবাহী বিনোদনের খোরাক জোগানো জন্য এই লাঠি খেলা ধরে রাখতে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
Leave a Reply