সভ্যতার প্রায় উন্নেষকাল থেকেই বাংলাদেশের মানুষের একমাত্র যাতায়াত ও পরিবহনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ যানবাহন ছিল গরুর গাড়ি।
কিন্তু আধুনিক সভ্যতার বিবর্তনে যন্ত্রচালিত ট্রাক্টর,লাঙ্গল ও পাওয়ার টিলার এবং নানা ধরনের যন্তরে আবিষ্কার ফলে বিলুপ্ত হচ্ছে গরুর গাড়ি।
নতুন নতুন প্রযুক্তির আবিষ্কারের ফলে মানুষের জীবনযাত্রার উন্নয়ন ঘটছে। পক্ষান্তরে হারিয়ে যাচ্ছে সেই ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ি ।
জানা যায় গরুর গাড়ি ইতিহাসে সুপ্রাচীন।খ্রিস্টজন্মের ১৬০০-১৫০০ বছর আগেই সিন্ধু অববাহিকা ও ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তর-পশ্চিম গরুর গাড়ির প্রচলন ছিল।
আর সেখান থেকে ক্রমে ক্রমে দক্ষিণেও ছরিয়ে পড়ে।এক সময় মানুষের এক মাত্র যানবাহন ছিল গরুর গাড়ি।বিশেষ করে কৃষকের ফসল বহন ও মানুষের যাতায়াতের একমাত্র বাহন ছিল গরুর গাড়ি।
বিশেষ করে প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে, হারিয়ে যাচ্ছে গরুর গাড়ি। মাঝেমধ্যে দু’-একটি গরুর গাড়ি চোখে পড়লেও শহরাঞ্চলে একেবারে দেখা যায়না। সে কারণে শহরের ছেলেমেয়েরা দূরের কথা বর্তমানে গ্রাম অঞ্চলের ছেলেমেয়েরাও গরুর গাড়ি শব্দটির সাথে পরিচিত নয়।
অনেক সময় শহরের ছেলেমেয়েরা গরুর গাড়ি দেখলে মা- বাবার কাছে যান্তে চায়। গরুর গাড়িটি ২ চাকা বিশিষ্ট একটি বিশেষ যানবাহন।
গরুর গাড়ি সামনের দিকে একটি জোয়ালের সাথে ২ টি গরু/ বলদ বাধা থাকে, বলদ জুটি মিলে গাড়ি টেনে নেয় যায়।সাধারণত এই গাড়ির চালক বসে সামনের দিকে।আর পিচে বসে যাত্রীরা, এবং বিভিন্ন মালপত্র বহন করাহয় গাড়ির পিচেন দিকে।বিভিন্ন কৃষিজাত ও দ্রব্য ফসল বহনের কাজে গরুর গাড়ি প্রচলন ছিল ব্যাপক।
আগের যুগের গরুর গাড়িতে বর- বধু যেত।গরুর গাড়ি ছারা বিয়ে করা কল্পনা ও করা যেত না, এবং কি বিয়ে বাড়ির মাল বহনের একমাত্র পরিবহন ছিল গরুরগাড়ি।
আর এই গরুর গাড়ির চালকে বলাহত গাড়িয়াল।আর সেই চালককে উদ্দেশ্য করে রচিত হয়েছিল, ওকি গাড়িয়াল ভাই,আস্তে চালাও গাড়ি, আরেক নজর দেখিয়া ন্যাং মুই দয়ার বাপের বাড়িরে গাড়িয়াল, এরকম অনেক গান।
এখন প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে এসব গরুরগাড়ি আর দেখা যায় না।বর্তমান যুগ হচ্ছে প্রযুক্তির যুগ,আর মানুষ এখন প্রযুক্তির আবিস্কারের ফলে, অনেক যান্ত্রিক পরিবহন তৈরি করেছে।তাই মানুষ এখন বিভিন্ন প্রয়োজনীয় মালামাল পরিবহনের বাহন হিসাবে ব্যবহার করছে,ট্রাক,লরি,পাওয়ার টিলার,নসিমন,করিমনসহ বিভিন্ন মালগাড়ি।
আর, মানুষের যাতায়াতের জন্য রয়েছে,রেলগাড়ি,বাস, মাইক্র, মোটরসাইকেল, বেবিটেক্সি,অটোরিকশা,ভ্যান গাড়ি ইত্যাদি।
ফলে এখন আর চোখে পরে না সেই ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ি।অথচ এই গরুর গাড়িতে,একটি সুবিধা হলো,এতো কোন জ্বালানি লাগে না,ফলে কোন ধোঁয়া হয় না,ফলে পরিবেশের কোন ক্ষতি করে না,এটি ধীর গতিতে চলতো,যার কারনে এতে তেমুন কোন দুর্ঘটনা আশঙ্কা থাকতো না,এটি পরিবেশবান্ধব একটি যানবাহন ছিল। যুগের পরিবর্তনে,ও প্রযুক্তির আবিষ্কারের ফলে,আমাদের এই ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ি হারিয়ে যাচ্ছে প্রযুক্তির কাছে।
Leave a Reply